হাজী মোঃ আবু সাঈদ (বার্তা সম্পাদক) ঃ উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় এবার অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬ তম ঈদুল ফিতরের জামাত।
শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক এ ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসউদ।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাতে অংশ নিতে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে।
বড় ঈদগাহ, বড় জামাত। বেশি মুসল্লির সঙ্গে নামাজ আদায় করলে দোয়া কবুল হয়, এমন আকর্ষণে শোলাকিয়ায় নামাজ আদায়ের জন্য কিশোরগঞ্জ সহ ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা অংশ গ্রহন করেছেন। নামাজ শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানায় শোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গি হামলার সতর্কতা হিসেবে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন সহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। তাছাড়াও মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন এবং সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো মাঠ মনিটরিং করা হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আরও জানান, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহনের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।
স্থানীয়দের মতে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’, এরপর ধীরে ধীরে সেই ‘সোয়া লাখিয়া’ পরিচিত হয়ে ওঠে শোলাকিয়া নামে।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের ৭ই জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের চেকপোষ্টে জঙ্গি হামলার ঘটনার ঘটে। ঐ হামলায় পুলিশের দুই জন কনষ্টেবল আনসারুল হক ও জহিরুল ইসলাম,স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক ও আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হন। জঙ্গি হামলার পর থেকেই প্রতি বছর ঈদের দিন শোলাকিয়ায় অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়।