মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে আবুল হাসেম এর নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়েছিল। ওই মামলায় তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাট সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর হতেই এই আসামীকে খুঁজতে ছিলো পুলিশ প্রশাসন। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ের করা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি মো.হাসিম উদ্দিন ওরফে আবুল হাসেমকে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে।
রবিবার (২৫ জুন) ২০২৩ দুপুরে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বগাপোতা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত হাসিম উদ্দিন ওরফে আবুল হাসেম ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের বগাপুতা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য মৃত সৈয়দ হোসাইন আহম্মদের নির্দেশে আল বদর আবুল হাসেম সহ ১৫/১৬ জন সশস্ত্র রাজাকার সোহাগি বাজারে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এবং সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক তহসিলদার আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও সোহাগি মাদ্রাসার হিসাব রক্ষক বৃ-কাঠালিয়া গ্রামের মো. নূরুল হক ওরফে তারা মিয়ার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর দুপুরে আওয়ামীলীগ সমর্থক হিন্দু ব্যবসায়ী গোপাল চন্দ্র করকে অপহরণ করে আঠারোবাড়ি পাকিস্থান আর্মি ক্যাম্পে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে গুলি করে হত্যার পর লাশ গুম করে।
এরপর সরিষা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক তহসিলদার আ’লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক মো. নূরুল হক ওরফে তারা মিয়াকে গুম করে ময়মনসিংহ বড় মসজিদ রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে। পরে ব্রম্মপুত্র নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাছিনুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে সোহাগি ইউনিয়নের নিজ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রবিবার বিকেলেই ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মাসুম আহম্মেদ ভূঞার সভাপতিত্বে প্রেস ব্রিফিং শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।