প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ১২:১৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ৯, ২০২৪, ৭:৩৪ অপরাহ্ণ
কিশোরগঞ্জে নিবন্ধিত হয়েছে আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম স্মৃতি গ্রন্থাগার নামের পাঠাগার।

মোহাম্মদ আবু সাঈদ (বার্তা সম্পাদক) ঃ শহীদ লেফটেন্যন্ট আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম স্মৃতি গ্রন্থাগারটি গত শনিবার (৮ জুন) ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ''তালিকাভুক্তরণ'' সনদ প্রাপ্ত হয়েছে। যার তালিকা নং কিশোর- ৯০।
উল্লেখ্য যে, চেতনাগত প্রেরণার উৎসস্থল ছিলেন নিম্নোক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারা হলেন কিশোরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোঃ ছিদ্দিক হোসাইন, গাজীপুর সেনানিবাসের অর্থনিন্ত্রক(বিওএফ) এর সাবেক অর্থ নিয়ন্ত্রক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা বিষয়ক বিআরডিবির সাবেক পরিচালক মোঃ নিজাম উদ্দিনসহ কিশোরগঞ্জের আলোকিত মানুষজন ও অন্যান্য উপদেষ্টাগণের দিক-নির্দেশনায় সবার দৃষ্টি কেড়েছে। গত ০৪ জুন কিশোরগঞ্জ সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান আজিজুল হক সুমন হঠাৎ হারুয়াস্থ শহীদ লেফটেন্যন্ট আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম স্মৃতি গ্রন্থাগারটি পরিদর্শনে এলে এর ব্যবস্থাপনা দেখে তিনি অত্যন্ত খুশি হন এবং অতি দ্রুত নিবন্ধনের ঘোষণা দেন।
সেই ঘোষনার প্রেক্ষিতে গত (০৮ জুন)-২০২৪ শনিবার দিনের ২ঘটিকায় সরকারি গণগ্রন্থাগার কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থাগারের কর্মকর্তাগণের হাতে সনদটি হস্তান্তর করেন লাইব্রেরিয়ান আজিজুল হক সুমন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এ গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ আবু সাঈদ, গ্রন্থাগার পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি প্রকৌশলী জাহঙ্গীর আলম খান, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মোঃ সারোয়ার জাহান, কোষাধ্যক্ষ মোছাঃ লতিফা আক্তার ও গ্রন্থাগারিক জান্নাতুল ফিরদাউস আশামণি।
গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠার প্রেরণা লাভ ও প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে ''ভোরের আলো বিডি'' অনলাইন পত্রিকা হতে গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ আবু সাঈদকে প্রশ্ন করা হয় যে, আমাদের জানামতে আশফাকুস সামাদ আপনার কিছুই হয়না। এলাকার পরিচয়ও ভিন্ন। তাহলে কেন এ নামে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করলেন ? তার প্রতিত্তরে হাজী আবু সাঈদ বলেন -"আমি পত্র-পত্রিকা ও গুগল সার্চে জানতে পারলাম যে, শহীদ লেফটেন্যান্ট আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম কিশোরগঞ্জের একজন গর্বিত সন্তান। তার পিতৃভূমি করিমগঞ্জ উপজেলার সতেরদরিয়া গ্রামে। সেখানে তাদের জমাজমি ও ভিটেবাড়ি রয়েছে। বর্তমান সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার আপন ফুফাতো ভাই।''এতবড় পরিচয় থাকা সত্ত্বেও কিশোরগঞ্জে সেই নামে কিশোরগঞ্জে কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। যদি কিশোরগঞ্জের এই বীর সন্তানের নামে রংপুর সেনসনিবাস, ভুরুঙ্গামারী ও ঢাকায় নানা কিছু নিদর্শন থাকলে কিশোরগঞ্জের তার নিজ জেলায় কিছুই হয়না কেন ? তাই আমি মনস্থির করলাম যে, আমি আমার ক্ষুদ্র সামর্থের মাধ্যমে অন্তত একটি গ্রন্থাগার তো করতে পারি। নিজের জেলায় নিজের অর্জনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই এই আক্ষেপ থেকে শহীদ লেফটেন্যন্ট আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম স্মৃতি গ্রন্থাগার নামের প্রতিষ্ঠানটি গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করি।''
আরেকটি বিষয় হলো কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনে এই শহীদ বীর উত্তমের নামটি তালিকাভুক্ত করার জন্য অবদান রাখেন কিশোরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডিপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসির উদ্দিন ফারুকী। তিনি আশফাকুস সামাদের স্বজন যুদ্ধাপরাধী আন্দোলনের সফল নেতৃত্ব ও যুদ্ধাপরাধী মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোঃ রেজাউল হাবিব রেজাক অবহিত করে তা নিশ্চিত করেন। এর পরই রেজাউল হাবিব রেজা ও এ গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী আবু সাঈদদ্বয় ঘাটাইল সেনানিবাসে সশস্ত্র দিবসে দাওয়াত পান। সেখান থেকেও এ বীর সেনানীর নামে কিছু একটা করার উদ্দীপনা পায় এই লেখক ও তথ্য সংগ্রাহক হাজী মোহাম্মদ আবু সাঈদ।
৮ জুন ২০২৪ খ্রিঃ দিনের ২ ঘটিকায় তালিকাভুক্তকরণ সনদটি পাওয়ায় জেলা সরকারি গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান আজিজুল হক সুমন যেমন সম্মানিত হলেন, তেমনি তিনি কিশোরগঞ্জবাসীর কাছে আশফাকুস সামাদ বীর উত্তম নামের নিজ জেলার একজন উচ্চপর্যায়ের খেতাবপ্রাপ্ত বীর সেনানীকে স্মরণ করার বিশেষ অবদান রাখলেন।
তাছাড়া যে এলাকায় গ্রন্থাগারটি করা হয়েছে তার অদূরেই আছে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ গুরুদয়াল সরকারি কলেজ। সন্নিকটে আছে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ ও বীর ঈশাখানের দেওয়ান বংশের হয়বৎ খাঁর পূণ্যময় স্থান। হয়বত নগরে এ ইউ কামিল নামে একটি মাদরাসাও আছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিনিয়ত বই পড়ুয়া ছাত্রও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রন্থাগারটি একটি উল্লেখযোগ্য স্থানে স্থাপিত হয়েছে বলে এলাকাবাসীও অত্যন্ত খুশি। গ্রন্থাগারের প্রতিষ্ঠাতা হাজী মোহাম্মদ আবু সাঈদের প্রেরণায় সর্বমূলে শহীদের বংশীয় স্বজন এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাউল হাবিব রেজা জড়িত থাকায় আমরাও গর্ব অনুভব করি।
Copyright © 2025 Vorer Alo BD. All rights reserved.