ভোরের আলো বিডি.কম এর পক্ষ হতে পাঠক ভাই-বোনদের প্রতি আমার প্রাণান্ত শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আপনারা আমার শুভেচ্ছা ও ভালবাসা গ্রহণ করুন আর না করুন একটি বিষয়ে আজ আমাকে বলতেই হবে। বিষয়টি সবার জন্যই উপকারি বটে।
আমরা যা কিছু করিনা কেন আমাদের পরিবার নিয়ে ভাবনা একান্ত দরকার। আমরা কেহ পরিবারের কর্তা পুরুষ, কেহ বা মা, কেহবা সন্তান সন্ততি। কিন্তু আমাদের পরিকল্পিত পরিবার নিয়ে ভাবিনা। একটি রাষ্টের যেমন একজন সরকার থাকে, সংবিধান থাকে এবং থাকে স্ব স্ব অধিকারের নিরাপত্তা, থাকে তেমনি একটি পরিবারের একজন কর্তা, পরিবার চালানোর বিধিমালা ও পরিবারের সদস্যদের স্ব স্ব অধিকার এবং মর্যাদার ক্ষেত্র ।সেটা হওয়া উচিত আমাদের সময়কে কাজে লাগিয়ে। আমরা যদি ২৪ ঘন্টার সময়কে একটি রুটিন অনুযায়ী কাজে লাগিয়ে পরিবারের সকল সদস্যের ওপর সারাদিনের কাজ ন্যাস্ত করতে পারি ও দিন শেষে কাজের সফলতা ও ব্যর্থতার কষতে পারি তবেই সার্থকতা। সংগঠন,ক্লাব,সমিতি,সংঘ,সংস্থা,পরিষদ বলে আমরা যা-ই বলিনা কেন তা গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালনা করতে সচেষ্ট হই। কিন্তু আমাদের সবচেগুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান হলো পরিবার। এ পরিবারের কোনো গঠনতন্ত্র নেই। নেই ২৪ ঘন্টা জীবন চালনার কোনো নীতমালা। মহান আল্লাহ পাক বিনা শর্তে আমাদেরকে সময় দান করেছেন। ঘুম থেকে ওঠার পর হতে শুরু করে সারাদিন ঘরে-বাইরে সময় কাটানোর পর আবার ঘুমে যাবার আগ পর্যন্ত কোনো বিধিমালা প্রয়োগ হয়না আমাদের ওপর। আমরা মনে করি পরিবার হলো স্বাধীনভাবে চলাফেরার একটি জায়গা। আসলে এ ভাবনাটিই আমাদের বড় সমস্যা। আমি ঘুম থেকে ওঠে হাতমুখ ধুয়ে প্রথমে মহান স্রষ্টার নিকট প্রার্থনা করতে পারি। এর জন্য নিয়মিত একটি সময় থাকতে পারে। তারপর কিছুটা হাঁটাহাঁটি সময়ও এতে যোগ হতে পারে। হাটহাঁটির পর আমরা স্ব স্ব কাজে মনযোগ দিতে পারি, অর্থাৎ যারা লেখাপড়া করেন তারা তাদের বইদান অধ্যয়নের নির্ধারিত সময়, যারা নিজের পেশায় যাবেন তার প্রস্তুতির সময়টুকু নির্ধারণ করতে পারি। এর ফাঁকে পরিবারের অভিভাবক ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খোঁজ নিতে পারেন।গৃহকর্তা নিতে পারেন রান্না-বান্নার খোঁজ-খবর ! সময় ভেদে গোছল ও খাওয়া-দাওয়ার একটি সময় বরাদ্দ থাকবে রুটিনের ফরমূলায় নিশ্চয়ই। অত:পর নিয়ম মাফিক স্ব স্ব কাজে যাবেন সবাই। ছোট্ট শিশু থাকলে গৃহিণীর জন্য অগোছালো একটা সময় থাকবেই, যা হয়তো নিয়মের ছকে বাঁধা যাবেনা। তবে সময়ের নিয়মে স্ব স্ব কাজের ধরণ ও ঘর হতে বের হবার সময়-ক্ষণ উল্লেখ থাকতে হবে। সবার কাজের ধরণ ও সময় ক্ষেপণ একরকম হয়না বিধায় সময় বিন্যাসে রুটিনের ভিন্নতা থাকতে পারে। বাহিরে কে কতক্ষণ অবস্থান করতে হবে তার সম্ভাব্য সময় ক্ষণও নির্ধারণ থাকতে পারে। সময়ের সঠিক ব্যবহারের পর আবার যথাসময়ে ফিরে আসার জন্য জবাবদিহিতা অপরিহার্য। সবাই বাসায় ফিরে আসার পর প্রাকৃতিক কাজ সেরে ওঠা খাবার-দাবারে ব্যয় করে কিছুটা সময় বিশ্রামের জন্য দেয়া যায়। সন্ধ্যার আগের সময়টা বৈকালিক হাটা-হাঁটি,সামান্য খেলাধুলা ও আলাপচারিতা তথা গল্পে সময় দেয়া যায়। তারপর সন্ধ্যাকালীন প্রার্থনা শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া, গৃহিণীদের রান্না-বান্নার প্রস্তুতি ও গৃহকর্তার এতে তদারকি চলতে পারে। এরপর খাবারের পালা যা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেরে ওঠা দরকার। খাবারের পর সামান্য বিশ্রাম ও পারষ্পারিক কুশলাদি বিনিময় পরিবার গঠনের সহায়ক হতে পারে। তবে যে কাজটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো সারাদিন কর্মের হিসেব-নিকেশ। এটি গৃহিণীও নিতে পারেন আবার গৃকর্তাও নিতে পারেন। এর জন্য যে সময়টি ব্যয় করবেন তা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
স্ব স্ব দায়িত্ব সবাই ঠিকমতো পালন করেছে কি না তা জিজ্ঞেস করা ও সমাধান করে দেয়া। তারপর কে কতটুকু ভালো ও মন্দ কাজে সময় দিয়েছে তা-ও জানতে চাওয়া এবং সঠিক পরামর্শ দিয়ে আদর্শ একটি পরিবার গঠনে প্রবৃত্ত হওয়া উচিত। সময় নির্ধারণে এরূপ বিন্যাস ও দায়িত্বানুভুতি না থাকলে কখনও একটি আদর্শ পরিবার গড়ে ওঠতে পারেনা। তাই আসুন শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন গড়ি ও সমাজে একটি আদর্শ পরিবার উপহার দেই।