ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ৪ আগষ্ট ২০২৪ বাজিতপুরের ভুমি অফিস সংলগ্ন আমিনুল মার্কেটের সম্মুখে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ,পুলিশ প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে শাহাপুর চেংরাহাটি গ্রামের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান মঞ্জুর ভাতিজা ও মোঃ জামাল উদ্দিনের ছেলে মো: আ: কদ্দুস নিহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আবদুল কদ্দুস (৩৬) যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিক্ষোভ করতে ছিলেন তখন কিশোরগঞ্জ -৫ আসনের সাবেক এমপি মো: আফজাল হোসেন তার হাতে থাকা শর্টগান ও তার ছেটো ভাই সাবেক মেয়র আনোয়ার হোসেন আশরাফ উদ্দিন তার হাতে থাকা রিভলভার দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছুঁড়তে থাকে। এই দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে শতাধিক বন্দুকধারী লোক বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে আঃ কদ্দুস এ দুই ভাইয়ের সম্মূখে পড়ে যায়। সুযোগ পেয়ে এ দু'ভাই শর্টগান ও রিভলভার আঃ কদ্দুসের দিকে তাক করলে আন্দোলনকারী আঃ কদ্দুস ভয়ে কাতর হয় ও সে হার্ট এটাকের শিকার হয়। তখন ঘড়িতে বিকেল ৪টা বাজে। কতক্ষণের মধ্যেই তার প্রাণবায়ু বের হয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, তার আগের রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদেরকে সন্ত্রাসী অখ্যায়িত করে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে একই সুরে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কঠোরভাবে দলীয়ভাবে আন্দোলনকারীদেরকে দমন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
এমন নির্দেশ পেয়ে এমপি আফজাল হোসেন ও মেয়র আনোয়ার হোসেন আশরাফ উদ্দিন তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহার করতে সচেষ্ট থাকেন। তাদের ছুঁড়া গুলিতে বৈষম্যবিরোধী বহু আন্দোলনকারী হতাহত হয়।
শহীদ আঃ কদ্দুসের পিতা জামাল উদ্দিন বলেনঃ " হুকুমকারী নেতা-নেত্রী ও অস্ত্রধারী এমপি-মেয়র, আওয়ামীলীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগ,পুলিশের অস্ত্র-শস্ত্রের ব্যবহার করার কারনেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে আমার ছেলে হার্ট এটাকে মারা যান। আমি অস্ত্রধারীদের ফাঁসি চাই।
পাশাপাশি ঢাকার নিহত হওয়া বাজিতপুরের সন্তান শহীদ রাহুল মিয়ার মা রুমা আক্তার তার ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন।