প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ১৯, ২০২৫, ৪:০৫ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ২৬, ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
স্ত্রীর ওপর অভিমান করে স্বামীর মৃত্যু! ঘটনা কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচরের
![]()
ভোরের আলো ডেস্কঃ🖋️
আত্মহত্যা বহু কারণে হয়। বেশিরভাগ আত্মহত্যা হয় স্বামীর সাথে অভিমান করে স্ত্রীর। কিন্তু স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্য খুব কমি হয়। কুলিয়ারচরের স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনাটি প্রমাণ করে স্বামী তার স্ত্রীকে অতিশয় ভালোবাসতো। ঘটনাটি নিম্নরূপঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্ত্রীর ওপর অভিমান করে গলায় ফাঁস নিয়ে শাহ জালাল (২২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ভৈরব থানা পুলিশ। নিহত শাহ জালাল কুলিয়ারচর ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত চার বছর আগে কুলিয়ারচরে মধ্য লালপুর এলাকার মনির মিয়ার মেয়ে জান্নাত বেগমের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শাহ জালাল। তাদের পরিবারে নুসরাত নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহ জালাল ঢাকা শহরে জুতার কাজ করেন। মনির মিয়া সম্পর্কে নিহত শাহ জালালের মামা হোন। বিয়ের পর থেকেই শাহ জালাল তার শ্বশুর বাড়ি ও ঢাকায় থাকতে শুরু করেন। তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের বাবা ও মা ঢাকায় থাকতেন। সেই সুবাদে মেয়েকেও প্রায় সময় ঢাকায় নিয়ে যেতেন। পরিবারের সচ্ছলতা নিয়ে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।এদিকে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন তার মা। কয়েকদিন থেকে স্বামীর বাড়িতে থেকে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) স্ত্রী জান্নাতের কাছে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে বিকাল ৫টায় নিজ ঘরে এসে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শাহ জালাল। পরিবারের সদস্যরা ফাঁসি থেকে নামিয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।নিহতের চাচাতো ভাই মামুন মিয়া বলেন, বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে আমার ভাই দেখেন তার স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। এতে শাহ জালাল ক্ষিপ্ত হলে স্ত্রীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে। মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমি ও আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেছে। তারা চাইতো আমার ছেলে যেন তাদের মেয়েকে ছেড়ে দেয়। আমার ছেলে তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তার স্ত্রী তাদের বাবা-মায়ের কথায় চলাফেরা করতো। এ নিয়ে আমার ছেলের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। গতকাল শুক্রবার বিকালে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে আসতে চায়নি। আমার ছেলে তাকে বলে এসেছে সে যেহেতু আসতে চায়নি তাহলে তাকে মুক্ত করে শান্তিতে থাকতে দিবে। পরে বিকালে নিজ ঘরে এসে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।মা শাহানা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। এখন আমার পরিবারের কী হবে? তার ছোটো মেয়েটাকে নিয়ে কীভাবে চলবো?এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আজ শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
Copyright © 2025 Vorer Alo BD. All rights reserved.