ডেস্ক রিপোর্ট: কিশোরগঞ্জে কৃষক সৈয়দ আলী হত্যা মামলায় ১৩ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় ৭ জন আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও বাকি ছয়জন আসামি পলাতক ছিলেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন-কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর কাজলাহাটি গ্রামের আব্দুল করিমের পাঁচ ছেলে আব্দুর রউফ ওরফে আলফাতুন (৬৯), আজিজুল হক এলাম (৫৪), মো. আলাউদ্দিন ওরফে আলাম মেম্বার (৫৯), কালাম মুন্সি (৬৪), আয়তুল হক মালাম (৫২)। দণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুর রউফ ওরফে আলফাতুনের দুই ছেলে আঙ্গুর মিয়া
ওরফে আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও হায়দার আলী (৩৭)। দণ্ডপ্রাপ্ত মো. আলাউদ্দিন ওরফে আলাম মেম্বারের দুই ছেলে রোয়েল (৩৯), রাসেল ওরফে ছোটন (৩৬) ও তার ভাই সোহেল (৪১)। আজিজুল হকের ছেলে রেজা মিয়া ওরফে আশিক আহম্মেদ হৃদয় (৩৪), তার ভাই রিয়াদ (৩২) ও কাইয়ূমের ছেলে জহিরুল ইসলাম কালা (৪৪)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের দেওপুর কাজলাহাটি গ্রামের কৃষক সৈয়দ আলীর সঙ্গে বাড়ির সীমানার জমি নিয়ে একই গ্রামের বাসিন্দা ও মামলার আসামিদের পূর্ববিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ নিয়ামতপুর বাসস্ট্যান্ড বাজারে ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনতে গেলে আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সৈয়দ আলীর ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২৯ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সৈয়দ আলী।
এ ঘটনায় ২৫ মার্চ নিহত সৈয়দ আলীর বড় বোন পারভীন সুলতানা বাদী হয়ে করিমগঞ্জ থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে সৈয়দ আলী মারা গেলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহর আলী ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল
করেন। মামলার সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে এই রায় দেন বিচারক।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট অশোক সরকার।