———রেজাউল হাবিব রেজা———–
________________________________
বাংলাদেশে নিবন্ধিত পত্রিকার সংখ্যা ৩২১০টি। দৈনিক,অর্ধসাপ্তাহিক,সাপ্তাহিক,পাক্ষিক,
মাসিক মিলে এ পরিসংখ্যান।
✍️আপনি ও আমি কয়টি পত্রিকার নাম জানি? এসব পত্রিকার নিবন্ধন যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে এর প্রতিনিধিও আছে।
✍️এসব পত্রিকার প্রতিনিধির সংখ্যাওতো প্রতিটি উপজেলা-জেলা ও বিভাগীয় শহরেও থাকতে পারে। তাহলে কী এসব পত্রিকার প্রতিনিধিদেরকে ভুয়া বলতে পারি? কোন যুক্তিতে ভুয়া বলবো?
✍️যে বিষয়ে আমাদের কথা বলা দরকার সেই বিষয়ে কিছু বলছিনা। চলচ্চিত্র প্রকাশনা ও সম্প্রচার অধিদপ্তর কেন এতগুলো পত্রিকার ছাড়পত্র দিবে? যদি ছাড়পত্র দিয়েও থাকে তবে তারা কেন প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধি দিবে? যেসব পত্রিকার সক্ষমতা আছে,ব্যাপ্তি আছে কেবল তারাই বাংলাদেশের সবকটি জেলা-উপজেলা ও বিশেষ স্থানে প্রতিনিধি দিতে পারে। কিন্তু যেসব পত্রিকা দৈনিক হিসেবে প্রকাশ হওয়ার কথা তার মধ্যে অনেক পত্রিকা রয়েছে যা সপ্তাহেও দেখা মিলেনা,মাসেও না। অথচ তাদেরও প্রতিনিধি আছে। অনলাইন পত্রিকার পরিসংখ্যান তো লক্ষাধিক থাকতে পারে। তাদেরও প্রতিনিধি আছে। প্রিন্টলাইনের পত্রিকা ৩ হাজারের উপরে থাকলে অনলাইনের সংখ্যা কত হবে? বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম নেই যে, ৩/৪টি করে অনলাইন পোর্টাল তৈরি করেনি। তা ভাইরাল হোক আর না হোক।
এভাবে অবাধে নিউজপোর্টাল তৈরি করে গোটা বাংলাদেশটাই নিউজের বাংলাদেশে পরিণত করা হয়েছে। এসব অনিয়মিত বা নিয়মিত অনলাইন/প্রিন্টলাইন/ইউটিউব চ্যানেল এত অধিক যে, বিশ্বের কোথায়ও এর নজীর নেই। এতসংখ্যক নিউজ পোর্টাল তৈরি হওয়া কোন উদ্দেশ্যে, কার স্বার্থে? এসব পোর্টাল থেকে ও প্রিন্টলাইনের পত্রিকা থেকে কী ইনকাম হয়? ইনকামের কথা এখন আর কারো অজানা নয়। যদিও ধরে নেয়া হয় ইনকাম আছে তাহলে সেইসব ইনকামের হিস্টোরি কারো জানা আছে? কাউকে ভুয়া সাংবাদিক বলার আগে সেইসব অন্তর্নিহত তথ্য নিয়ে কথা বলুন। একজন সাংবাদিকের গলায় কার্ড ঝুলছে দেখে তাদেরকে কিছু বলার আগে যারা গলায় ঝুলিয়ে দিচ্ছে তাদেরকে নিয়ে কথা বলুন। সেইসব প্রকাশকদের নিয়ে কলাম লিখুন,প্রতিবেদন তৈরি করুন। আরেকটু বাড়িয়ে যদি বলতে চাই তাহলে বলবো কোনো পত্রিকা প্রকাশের আগে যারা নিবন্ধন দেয় তাদেরকে নিয়ে কথা বলুন। চলচ্চিত্র প্রকাশনা ও সম্প্রচার অধিদপ্তরকে কিছু বলুন। তারা এতসব নিবন্ধন শখ হিসেবে দেয়, নাকি পয়সার বিনিময়ে দেয়, নাকি সম্প্রচারের ব্যাপ্তি ঘটাতে কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব পালনের কর্তব্যবোধ থেকে দেয়? এ বিষয়ে আপনারা অনুসন্ধানী তথ্য প্রকাশ করতে পারেন না? মূল জায়গায় আক্রমণ না করে কেবল তাদের প্রতিনিধিদেরকে ভুয়া বলে লাভ কী ? যেসব পত্রিকা নিবন্ধিত হয়েছে তাদের প্রতিনিধিদেরকে ভুয়া বলবেন কেন? কোন যুক্তিতে, কোন আইনে? আপনি আমি তো ৩ হাজার পত্রিকার নাম বলতে পারবেন না। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নিবন্ধনকৃত পত্রিকার প্রতিনিধি থাকলে তাদের দোষ কী? দোষ হলে হবে যারা নিবন্ধন দিয়েছে তাদের।
🔴✍️ আমি তো তথ্য ঘেটে দেখলাম বেশিরভাগ প্রতিনিধির কার্ড ঠিক আছে। কমসংখ্যক ক্ষেত্রে বানিয়ে নেয়া কার্ড রয়েছে। আমাদের কথা বলা দরকার ছিলো এসব সৌখিন প্রতিনিধিদের আচার-আচরণ নিয়ে কথা বলার। এসব বৈধ অনিয়মিত পত্রিকার বা নিয়মিত পত্রিকার প্রতিনিধিদের চরিত্র নিয়ে কথা বলার। দেশে হিজড়াদের উপদ্রব নিয়ে কথা ওঠছে। দেশে অধিকাংশ কৃত্রিমভাবে অপারেশনের মাধ্যমে বা হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে অসংখ্য হিজড়া আবির্ভাব হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য যেমন অর্থ ও লালসা। ঠিক তেমনি এতসব সংবাদকর্মী তৈরি হওয়া অর্থ ও লালসা চরিতার্থ করার প্রবণতাসম্পন্ন এমন হিজড়াদের মতোই বললে অত্যুক্তি হবেনা। আজ উচিত ছিলো সাংবাদিকদের স্বচ্ছতার জন্য তাদের গতিবিধি ও অপকর্মের জন্য অনুসন্ধানী একদল সৎ গোয়েন্দা রিপোর্টার সৃষ্টি করা। এটা সরকারের দায়িত্ব। শুধু ডিজিটাল আইন দিয়ে এর তদারকি হয়না। বাংলাদেশ প্রেসকাউন্সিল মানে অকেজো এক প্রতিষ্ঠান। যদিও এতে বিচারক দেয়া আছে। সাংবাদিকদের বিচারের জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হবার কথা বলা আছে। কিন্তু অপর্যাপ্ত আয়োজনে চলছে এই প্রেসকাউন্সিল। বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে এমন বিচারকর্ম কী প্রেসকাউন্সিল করতে পেরেছে? যদি সংবাদকর্মীদের অপকর্মের বিচারের ব্যবস্থা না থাকে তাহলে এক সংবাদকর্মী অপর সংবাদকর্মীকে ভুয়া বলে লাভ কী? কোনো সংবাদকর্মী যদি চাঁদাবাজ হয়,প্রতারক হয়,ভাঁওতাবাজ হয়,শক্তিপ্রদর্শনকারী হয় তাহলে সেটা তার চরিত্রের দোষ ! সেটা ছোট ও অখ্যাত পত্রিকার সংবাদকর্মী ও প্রতিনিধিরা যেমন করতে পারে, তেমনি এমন অপকর্ম বড় বড় পত্রিকার সংবাদকর্মী ও প্রতিনিধিরাও তা করতে পারে। তাদেরকে সাংবাদিক না বলে সাংঘাতিক বলাই শ্রেয়। কিন্তু ভুয়া বলতে পারেন না। ভুয়া বলবেন তাদেরকে যারা নিবন্ধিত পত্রিকার কোনো পরিচয়পত্র না পেয়েও নিজে একটি কার্ড বানিয়ে নিয়েছে। যারা কার্ড বানিয়ে নেয় তারা সবজায়গায় তার কার্ড প্রদর্শন করেনা। কারণ ধরা খাওয়ার ভয় বিদ্যমান। যারা মুর্খ/ অশিক্ষিত /অসচেতন/ দূর্বল শ্রেণি আছে তাদের কাছই তা প্রদর্শন করে। ওরা জায়গা বুঝেই তা প্রদর্শন করে ও ফায়দা লুটে। আর যারা নিবন্ধিত পত্রিকার প্রতিনিধি তারা তাদের কার্ডের বৈধতার সাহসে গলায় ঝুলিয়ে সবজায়গায় তা প্রদর্শন করে। তাদের পত্রিকা প্রকাশ হোক আর নাই হোক। এসব নিবন্ধিত পত্রিকার নিবন্ধন বাতিল করতে কেউ লেখালেখি করেনা। অথচ রাষ্ট কর্তৃক বৈধতা দেওয়া পত্রিকার প্রতিনিধিদেরকে ভুয়া বলতে মজা পাই। মূল জায়গায় কেউ হাত দেইনা।
✍️🔴আমার কথা হলো বাংলাদেশে যেসব পত্রিকা চলেনা তার নিবন্ধন বাতিল করা হোক। আর চলমান পত্রিকা ঠিক রেখে তাদেরকে সহায়তা করা হোক।
🔴✍️ প্রচারবহুল পত্রিকা হোক আর কমপ্রচারের পত্রিকা হোক তাদের প্রতিনিধিরা প্রতারক,বাটপার হলে তা পত্রিকা বরাবরে নালিশ করে তার আইডিকার্ড জব্দসহ প্রতিনিধিত্ব বাতিল করা হোক। সংশ্লিষ্ট পত্রিকা এর কোনো ব্যবস্থা না নিলে তা প্রেসকাউন্সিলে উপস্থাপন করে শাস্তির বিধান করা হোক। সাধারণ নাগরিককেও এমন অভিযোগ দিতে প্রেসকাউন্সিলকে জানতে সবজায়গায় তার প্রচার দেয়া হোক। মানুষ জানুক যে সাংবাদিকরা অপরাধ করলেও তাদের বিচারের শক্ত ব্যবস্থা আছে। তাহলে দেশে অপ-সাংবাদিকতা কমে আসতে পারে।
Leave a Reply