-
- অপরাধ, আইন-আদালত, কিশোরগঞ্জ বার্তা, প্রশাসন, ময়মনসিংহ, রাজনীতি
- ৮বছর পলাতক থাকার পর যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী খন্দকার গোলাম রাব্বানী গ্রেফতার
- Update Time : মার্চ, ২৩, ২০২৩, ২:০৯ অপরাহ্ণ
- 732 View

রেজাউল হাবিব রেজা,বিশেষ সংবাদ
সংবাদ
যুদ্ধাপরাধী মামলার কার্যক্রম আছে কি নাই এমন নিঃশব্দতা স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষকে বিচলিত করে দেয়। হতাশায় ভূগে ১৯৭১ সালের ভুক্তভোগী শহীদ পরিবারের লোকজন। এমন হতাশার মাঝে দু’একটি সংবাদ চাওর হলে শান্তিকামী মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়। মানুষের মনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারিক কার্যক্রম চালু আছে বলে আবার সে ধারণা ফিরে আসে। একজন পলাতক আসামীকে র্যাব কর্তৃক গ্রেফতার করায় মিডিয়ার বদান্যতায় শহীদ পরিবারের লোকজন তা জানতে পারছে ও আদালতের চলমান কার্যক্রমের প্রতি আস্থা জমছে। আজকের ২৩ মার্চ তারিখে গ্রেফতার হওয়া রাজাকারের কাহিনী নিম্নে দেয়া গেল।
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি খন্দকার গোলাম রব্বানীকে (৭১) গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। দীর্ঘ ৮ বছর পলাতক থাকার পর শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলার সদর থানাধীন সোনার বাংলা আবাসিক হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাবাদে রব্বানী একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-২ এর এএসপি মো. ফজলুল হক বলেন, গোলাম রাব্বানী মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহ এলাকার কুখ্যাত রাজাকার এবং পাকিস্তানিদের দোসর, অপহরণ, পাশবিক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও গুমসহ নানা মানবতাবিরোধী অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি খন্দকার গোলাম রব্বানীকে যুদ্ধাপরাধী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ (বাংলাদেশ) আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন।
মো. ফজলুল হক বলেন, একাত্তরের ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ময়মনসিংহের গোলকিবাড়ি বাইলেনের বিখ্যাত ভাস্কর আব্দুর রশিদকে অপহরণ, নির্যাতনের পর দড়ি দিয়ে জিপের পেছনে টেনে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা ও মরদেহ গুম এবং একাত্তরের ২ আগস্ট ত্রিশাল থানার বৈলর হিন্দু পল্লী ও মুন্সীপাড়ায় অগ্নিসংযোগ, সেন্টুকে গুলি করে হত্যা ও দুইজন হিন্দুকে গুলি করে আহত, শহীদ আ. রহমানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজাকার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে খন্দকার গোলাম রব্বানী মানবতাবিরোধী কাজে সরাসরি অভিযুক্ত।
এছাড়াও তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে জামায়াত ইসলামীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ২০১৫ সালের ১৯ মে ময়মনসিংহের আদালতে ত্রিশালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন এ মামলা করেন। ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এজাহারটি গ্রহণ করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে ৫টি পৃথক অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল খন্দকার গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রমের পর গত ২০ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল খন্দকার গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে আমৃত্যু কারাদণ্ড সাজা প্রদান করেন। গোলাম রব্বানী মামলা দায়েরের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়িয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, রায় ঘোষণার পর হতে র্যাব-২ এর বিশেষ গোয়েন্দা দল বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে অভিযান শুরু করে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধী গোলাম রাব্বানী এর অবস্থান মৌলভীবাজারে নিশ্চিত হয়ে র্যাব-২ ও র্যাব-৯ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
More News Of This Category