আজ ৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি ও আনুষাঙ্গিক বিষয়

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদুল ফিতরে দেশের সবচেয়ে বড় জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ১৯৭তম জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এ ঈদগাহ ময়দান। সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে মাঠের কাতারে দাগ কাটা, রং করা, ধোয়ামোছাসহ নানা সংস্কারমূলক কাজ শেষ হয়েছে। মাঠের চারপাশে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।

এবার এখানে তিন থেকে চার লক্ষাধিক মানুষের সম্ভাব্য সমাগমের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। দেশের নানা প্রান্তের মুসল্লিরা এখানে নামাজে অংশ নিতে আসেন।

রোববার ঈদগাহ ময়দানের শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতির কাজ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ। তাঁরা ঈদগাহ ময়দানের নিরাপত্তাব্যবস্থা, দেশের অন্যান্য জেলা থেকে আসা মুসল্লিদের থাকা-খাওয়ার প্রস্তুতি, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা, মুসল্লিদের স্বাচ্ছন্দ্য আসা-যাওয়ার ব্যবস্থাসহ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানান, এবার সহস্রাধিক পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, এপিবিএন ও পাঁচ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। বসানো হয়েছে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর। পুরো জামাত পর্যবেক্ষণ করা হবে ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে। ঈদের দিন দূরবর্তী মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার সুবিধায় ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে দুটি বিশেষ ট্রেন যাতায়াত করবে। ঈদ জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়।

শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের বড় জামাত আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি দেশ–বিদেশের মুসল্লিদের মাঠে এসে নামাজ পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা পর্ষদের সূত্রে জানা গেছে, শোলাকিয়া ঈদগাহে এবার ১৯৭তম ঈদের জামাত হবে। নামাজ শুরু হবে সকাল ১০টায়। ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ ইমামতি করবেন।

পরিচালনা পর্ষদ সূত্র জানায়, শোলাকিয়ার ৬ দশমিক ৬১ একর আয়তনের ঈদগাহের মূল মাঠে নামাজে ২৬৫টি কাতার থাকবে। প্রতিটি কাতারে ৬৫০ থেকে ৭০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করার সুযোগ পাবেন। মূল মাঠের চারপাশে আরও অনেক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।

মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশ সুপার রাসেল শেখ বলেন, ২০১৬ সালের শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিবারের মতো এবারও মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মাঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ধাতব বস্তু শনাক্তকরণ যন্ত্র (মেটাল ডিটেক্টর) দিয়ে তল্লাশি করে মুসল্লিদের মাঠে ঢোকানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category