আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তিনদিন যাবত মুখলেছ উদ্দিন ভুইয়ার লাশের অপেক্ষায় ছিলেন স্বজন ও গুরুদয়াল কলেজ এলাকার শত শত নরনারী। লাশ পেয়ে স্বস্থি এলাকায়

রেজাউল হাবিব রেজা

“”””””‘”””””””'””””””তিনিদিন ধরে উৎকন্ঠার সাথে সময় ক্ষেপনের পর নরসুন্দা নদী থেকে মিঠামইনের  কেওয়ারজোর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুখলেছের  গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়ে আসার পথে নিখোঁজের ২৫ দিন পর এক ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যার পর তাঁর মরদেহ নরসুন্দা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পুলিশের হাতে আটক নিহতের এক বন্ধু।

পুলিশ গত রবিবার থেকে আজ বিকেল ৪টা পর্যন্ত নরসুন্দা নদীতে অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ কেওয়ারজোর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোখলেছ উদ্দিন ভূইয়ার (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের ব্যবহৃত লুঙ্গি, ভাড়া বাসার চাবি ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মোখলেছ উদ্দিন ভূইয়া জেলার মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে জেলা জজ আদালতের একজন আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের হারুয়া বৌবাজার এলাকার ভাড়া বাসায়।
মোখলেছ উদ্দিন গত ২৯ মার্চ জেলা শহরের পাগলা মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে ৩১ মার্চ কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর বড় ভাই মিজানুর রহমান। পরে, ১৬ এপ্রিল এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫ জনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন তিনি।
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে গত ২০ এপ্রিল বেলা ১১টায় হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ এলাকা থেকে নিখোঁজ মোখলেছের বন্ধু মিঠামইনের কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের মিজান শেখ (২৮), তাঁর বাবা শেফুল শেখ (৬৫), মিজানের দুই ভাই মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখকে (২১) আটক করা হয়।

oppo_32

আটকের পর ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গলা কেটে হত্যার পর নরসুন্দা নদীতে ফেলে দেওয়ার প্রাথমিক তথ্য দেয় মিজান শেখ।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘নিহতের বন্ধুর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত রবিবার থেকে উদ্ধার অভিযান চলছিল। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জনৈক কুচুরীপানা পরিষ্কারক ও সাথে আরো তিনজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে নিহতের পরিবার ও দর্শকগণকে ভাসমান লাশের স্থল দেখিয়ে দিলে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের লোকজন কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় খবর দেয়। তখন পুলিশ এসে  নরসুন্দা নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। । হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন নিহতের বন্ধু মিজান শেখ। এ বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব আমরা।’
তবে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, মিঠামইনে কোনো হত্যাকান্ড না ঘটিয়ে হারুয়া এলাকায় এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পেল কী করে? কেন মিজান শেখ গং এ স্থলে হত্যাকান্ড চালানো নিরাপদ মনে করলো?
মুখলেছ দীর্ঘদিন যাবত হারুয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করায় তার অনেক পরিচিত বন্ধু গড়ে ওঠে। সে অনেকের বাসায় প্রাইভেটও পড়িয়েছে। সেই হিসেবে মুখলেছ অনেকের শ্রদ্ধার পাত্র। আর খুনি মিজান ও তার ভ্রাতৃবর্গের পরিচয়টা এখানে কম। তাহলে কোন সাহসে এই হারুয়ায় এসে এমন নৃশংস হত্যাকান্ত চালাতে পারলো তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে।
পুলিশ সুপার  বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category