আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রশাসনের সংবর্ধনায় মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠে ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান

(মো:সারোয়ার জাহান)মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এ নিয়ে সর্বমহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় এ ঘটনা ঘটে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া তাঁর বক্তব্য শেষ করেন ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত অন্য মুক্তিযোদ্ধারা করতালি দেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ আবু সাঈদের ছবি দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রচারিত পোস্টারের সমালোচনা করেন ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া। তিনি বলেন, একাত্তর আর ২৪-এর আগস্ট এক নয়। ৫ আগস্ট ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। আর একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। পোস্টারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি দেওয়া যেত।

এ সময় অন্য মুক্তিযোদ্ধারা করতালি দিয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন। এর পর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক দুই কমান্ডার কে এম মাহবুবুল আলম এবং মিজানুর রহমানও তাদের বক্তৃতায় ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়ার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান। তবে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘একাত্তরে হয়েছিল বিপ্লব, আর ৫ আগস্ট হয়েছে গণঅভ্যুত্থান। গত ১৬ বছর এই অনুষ্ঠানে আমরা মন খুলে কথা বলতে পারিনি। নির্দেশনা দেওয়া থাকত, কী বলা যাবে আর কী বলা যাবে না।’

জানা গেছে, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া আওয়ামী লীগপন্থী। তাঁর ছেলে খালেদ সাইফুল্লাহ সাফাত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। অন্যদিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এ বি ছিদ্দিকও আওয়ামী লীগপন্থী।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার দোসরদের জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন প্রোগ্রামে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে জেলা প্রশাসককে আমরা বিভিন্ন সময়ে সতর্ক করেছি। কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথা শুনছেন না। এরই ফলশ্রুতিতে আজকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে, যা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমি মনে করি, এটি জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতা। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা বক্তব্য শেষে একটা পর্যায় বলে ফেলেছি। ২০২৪ আর ‘৭১ এক নয়। আমরা শরীরের রক্ত দিয়ে যুদ্ধ করছি।’

স্লোগানের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, ‘আমি তো শুনিনি। আমি শুনতে পাইনি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category