আজ ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অপরাধীদের গডফাদার, অর্থের জোগানদাতা কাউকেই আমরা ছাড়বো না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

ভোরের আলো ডেস্কঃ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে, সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থাপনায় পেট্রোল দিয়ে অগ্নিসংযোগ না করে গান পাউডার ব্যবহার করেছে। গত ১৬ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে যে তাণ্ডব হয়েছে, রংপুর সেই তাণ্ডব থেকে বাদ যায়নি বরং অনেক জেলার চেয়ে বেশি হয়েছে।’

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা রংপুরের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা, আওয়ামী লীগের কার্যালয় বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে পরিদর্শন করেন তিনি। পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন তার সঙ্গে ছিলেন। আন্দোলনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়। এসব স্থান পরিদর্শন শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘একটি সংঘবদ্ধ দল বিশেষ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যারা দেশে জঙ্গির উত্থান ঘটিয়েছিল, সেই জামায়াত-বিএনপি জঙ্গিদের নিয়ে এবারও রাষ্ট্রকে পুরোপুরি অকার্যকর করার জন্য কাজ করেছে। তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনে কৌশলে যুক্ত হয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘রংপুরে তারা যে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশের গাড়িসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গাড়ি জ্বালিয়ে মালামাল লুট করেছে। উপাচার্য ও তার পরিবারসহ ২০ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। তাজহাট থানায় আক্রমণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ শ্রমিক লীগ অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি, ডিবি ডিসি ক্রাইম, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘অপরাধীদের গডফাদার, অর্থের জোগানদাতা কাউকেই আমরা ছাড়বো না। আমরা সবাই মিলে ওদের চিহ্নিত করে প্রতিহত করবো এবং বিচারের মুখোমুখি করবো।’

কারফিউ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। বিজিবি, পুলিশ সবাই মিলে জনগণকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করছে। সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উন্নতি হচ্ছে। আমরা কারফিউর সময় নিয়ে প্রতিদিনই বৈঠক করছি আগামীকাল সময় কত কমানো যায়। তবে আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হয়ে গেলে কারফিউর আর প্রয়োজন হবে না।’

সাংবাদিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনে দুই জন সাংবাদিক শাহাদাতবরণ করেছেন। এক নারী সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়ে এখন ট্রমাটাইজ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এখনও নিজের জীবনকে বিপন্ন করে সংবাদের জন্য কাজ করছেন, এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি নাসিমা জামান ববি, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category